হুমাইপুর বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর উপজেলার একটি ইউনিয়ন।
এটি অত্যন্ত ঐতিহ্যবাহী একটি ইউনিয়ন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে এই অঞ্চলের অনেকে সরাসরি যোগদান করে এবং মুক্তিযুদ্ধে বিরাট ভূমিকা রাখে। এটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য অনেক বিখ্যাত।
হুমাইপুর এর অবস্থান
এটি হাওড় অঞ্চলের মধ্যে অবস্থান করেছে এবং এটি ভাটি অঞ্চলীয় ইউনিয়ন। উপজেলা থেকে অনেকটাই দূরে এর অবস্থান।
বাজিতপুর থেকে প্রায় ৬.৭১ মাইল দূরে এর অবস্থান।
এর পাশে রয়েছে অষ্টগ্রাম উপজেলার কাস্তুল, দেওঘর এবং ভাটিনগর গ্রাম।
ইতিহাস
মুক্তিযুদ্ধে এই অঞ্চলের অনেকে নিজেদের জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছিল এবং অনেকে শহীদ হয়।
পরবর্তীতে তাদের অনেককে বীর প্রতীক উপাধি সম্মাননা দেয়া হয়।
আয়তন ও জনসংখ্যা
হুমাইপুর ইউনিয়নের আয়তন প্রায় ৭৩০১ একর এবং এর জনসংখ্যা প্রায় ২৭৪৫০ জন।
জনসংখ্যার অধিকাংশই পুরুষ এবং শিশু।
শিক্ষা
ভাটি এলাকার মধ্যে এই ইউনিয়নে বর্তমানে শিক্ষার হার অনেকাংশে বেড়েছে। পূর্বে এর প্রায় অর্ধেকের মত মানুষ নিরক্ষর ছিলো। তন্মধ্যে অধিকাংশই ছিলো নারী। বর্তমানে এই ইউনিয়নের অধীনে ১টি উচ্চবিদ্যালয়, ৫ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১ টি মাদ্রাসা, এবং ৫ টি মহিলা মাদ্রাসা রয়েছে। এখানে ইসলামী শিক্ষার হার অনেকাংশে বেশি।
ধর্ম ও সংস্কৃতি
এই অঞ্চলের সবাই বাঙালি। এখনকার অধিকাংশই কৃষক এবং জেলে। এবং অধিকাংশ মানুষই মুসলমান। তবে কিছু সংখ্যক সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষও এখানে বসবাস করে। এখনকার ইসলামী সংস্কৃতি অনেক সমৃদ্ধ। বাজিতপুর উপজেলায় সবচেয়ে ধার্মিক অঞ্চলও বলা হয় এই অঞ্চলকে। এখনকার অধিকাংশ পুরুষ ও নারীরা ইসলামী দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত। এখানে সনাতন ধর্মাবলম্বী ও মুসলমান সবাই একসাথে মিলেমিশে বসবাস করে।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি হুমাইপুর
ভাটি অঞ্চলখ্যাত এই এলাকার তিন মাস বর্ষার পানি ভরপুর থাকে। হাওড়ের মধ্যে যেনো এক টুকরো দ্বীপ। এখানে বর্ষায় নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। এখানে অনেকে আসেন এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে। সারা বাংলাদেশ থেকে দর্শনার্থীরা এখানে নৌকায় ভিড় জমান এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে।
বর্ষা মৌসুমের পরে শুরু হয় এই অঞ্চলের ধান রোপণ কার্যক্রম। তখন এখনকার মানুষের মধ্যে নতুন এক কাজের আমেজ তৈরি হয়। সে সময় এই হাওড় অঞ্চলের সৌন্দর্য ও মনের মধ্যে এক দারুন অনুভূতির সৃষ্টি করে।
বিখ্যাত মণীষী
১৯৬২ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর নিযুক্ত ছিলেন আব্দুল মোনেম খান।
তার জন্ম হুমাইপুর ইউনিয়নের বানাউল গ্রামে।
উনি তৎকালীন সময়ে এই গ্রামের অনেক উন্নতি সাধন করেন।
হুমাইপুর এর যোগাযোগ ব্যবস্থা
এটি ভাটি অঞ্চল হওয়ায় বছরে এর তিন মাস চারপাশে বর্ষার পানি বহমান থাকে। এ সময় সবাই নৌকায় করে যাতায়াত করে এবং বাকি নয়মাস স্বাভাবিক হাওড় অঞ্চলের মাটির রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করতো। বর্তমানে এর হাওড়ের মধ্যে পাকা রাস্তা তৈরি হওয়ায় এর যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক সহজ হয়েছে।
Very Nice