১২২ বছরের মাঝে সবচেয়ে বড় বন্যায় বিপর্যস্ত পুরো সিলেট বিভাগ। পানিতে ডুবে গেছে পুরো সিলেট। সুনামগঞ্জের ৯০ ভাগ এবং সিলেটের ৬০ ভাগ এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। অবিরাম বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে সিলেট ও সুনামগঞ্জে সৃ্ষ্ঠ বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে সিলেট জেলার ৩০ লাখ ও সুনামগঞ্জ জেলার ২০ লাখ লোক কঠিন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় সিলেট রেলস্টেশন থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বন্যার পানিতে ডুবে থাকা সুনামগঞ্জ এখনো অন্ধকারে রয়েছে। এদিকে পানি প্রবেশ করায় গতকাল শনিবার সকালের দিকে কুমারগাঁও বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রটি নিরাপত্তার স্বার্থে বন্ধ করে দিলে সিলেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যহত হয়।
পরে পানি নিষ্কাশন করে উপকেন্দ্রটি চালু করা হলে সন্ধ্যা ৭টার দিকে সিলেটের কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়।
রানওয়ে বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় শুক্রবার থেকে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর বন্ধ ঘোষনার একদিনের মাথায় শনিবার সিলেট রেল স্টেশনও বন্ধ করে দেয়া হয়।
এতে কার্যত সিলেট সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
সিলেটে উদ্ধার তৎপরতা
এ পরিস্থিতিতে বন্যার্তদের উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতার জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
এরই মধ্যে বন্যাকবলিত সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছে সেনাবাহিনী।
দুই জেলার ৮ উপজেলায় সেনাবাহিনীর ১০ প্লাটুন এবং তাদের আওতাধীন ৬টি মেডিকেল টিম কাজ করছে।
নৌকা দিয়ে বাড়িঘর থেকে পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসছেন সেনা সদস্যরা।
সিলেট সেনানিবাসের জিওসি মেজর জেনারেল হামিদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ”পরিস্থিতি বিবেচনায় সিলেটের ৩টি উপজেলা ও সুনামগঞ্জের ৫টি উপজেলায় সেনাবাহিনী পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধার তৎপড়তা ও ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম চালাবে।
এর মধ্যে সিলেট জেলার সদর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানিগঞ্জ এবং সুনামগঞ্জ জেলার সদর, দিরাই, ছাতক, দোয়ারাবাজার এবং জামালগঞ্জ উপজেলা রয়েছে।”
এদিকে সিলেট আবহাওয়া অফিস জানালো আশার বাণী।
সোমবার থেকে সিলেটে বন্যার পানি কমতে পারে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া সিলেট-সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে ব্রিফিং কালে বলেন,
“আগামী সোমবারের আগে সিলেট অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার আশা নেই।
আর উত্তরাঞ্চলে আরও তিন থেকে চার দিন পানি বাড়তে থাকবে।
তবে সেখানে পরিস্থিতি নাজুক হবে না। সোমবার থেকে পানি ভৈরব বাজার হয়ে নেমে যাবে।
আর দেশের উত্তরাঞ্চলে আরও তিন থেকে চার দিন বন্যার পানি বাড়তে থাকবে। যমুনা অববাহিকায় পানি বাড়তে থাকবে”
পদ্মাসেতু নিয়ে আমাদের লেখা এ আর্টিকেলটি পড়ুন।